জামিনের শর্ত ভাঙায় অ্যাসাঞ্জের ৫০ সপ্তাহের জেল (Assange’s 50-week prison sentence breaks bail)

মে, ১, ২০১৯, ৯:৫১ অপরাহ্ণ

world news bdnewslist

আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসের সহপ্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে ৫০ সপ্তাহের কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের একটি আদালত। জামিনের শর্ত ভেঙে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে ঢুকে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার কারণে তাঁকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। এদিন আদালতের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।

অ্যাসাঞ্জকে বুধবার বিচারক ডেবোরাহ টেইলরের আদালতে হাজির করা হলে তিনি এই আদেশ দেন। এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছরের কারাদণ্ড। অ্যাসাঞ্জকে তার থেকে ১৪ দিন কম ৩৫০ দিন অর্থাৎ ৫০ সপ্তাহের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এদিন বিচারক বলেন, ‘ব্রিটিশ বিচার ব্যবস্থার প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করেছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।’

২০১২ সালে পিৎজা সরবরাহকারীর ছদ্মবেশে ইকুয়েডর দূতাবাসে ঢুকে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ। ধর্ষণের মামলায় বিচারাধীন অবস্থায় সেখানে প্রায় সাত বছর কাটান তিনি। গতমাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ের মেয়াদ শেষ হলে জামিনের শর্তভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে দূতাবাস ফটক থেকে গ্রেপ্তার করে ব্রিটিশ পুলিশ।

আদালতে অ্যাসাঞ্জের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তাঁর আইনজীবী মার্ক সামারস। সেখানে বলেন, যারা মনে করছেন, আমি আইনের প্রতি অবজ্ঞা করেছি, তাদের কাছে আমি অকপটে ক্ষমা চাইছি। এটা আমার ইচ্ছাকৃত ছিল না। তখন আমি আসলে কঠিন সময় পার করছিলাম। তৎক্ষণাৎ যা ভালো মনে হয়েছে তাই করেছি।

আইনজীবী সামারস বলেন, অ্যাসাঞ্জ ভয়ে ছিলেন তাঁকে সুইডেন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হতে পারে। এবং সর্বশেষ গন্তব্য হতে পারে কিউবায় গুয়ান্তানামো বে বন্দিশালায়।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উইকিলিকসের মাধ্যমে ফাঁস করার দায়ে সাত বছর জেল খেটেছেন মার্কিন সেনাসদস্য চেলসি ম্যানিং। ম্যানিং ইরাকে গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন।

বুধবার লন্ডনে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী জানান, কারাবন্দি অবস্থায় ম্যানিংকে নানাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এমনকি তাঁকে সেনাকর্মকর্তাদের সামনে উলঙ্গ হতে বাধ্য করা হয়।

এদিন বিচারক ডেবোরাহ টেইলর জানান, দূতাবাসের ফটক থেকে যে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এ খবর বিশ্বব্যাপী জানাতে যুক্তরাজ্য সরকারের ১৬ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে, যা বাংলাদেশি টাকায় ১৭৭ কোটি ২৮ লাখ ২০ হাজার।

২০১০ সালের দিকে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গুরুত্বপূর্ণ নথি উইকিলিকস ওয়েবসাইটে ফাঁস করে দেন তিনি। তাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিংবা সৌদি রাজ পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড প্রকাশ পেয়ে যায়।

আধুনিক রাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ হাজির করায় জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ দুনিয়ার বহু মানুষের কাছে একজন নায়কের নাম। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে ফেলেছেন বলে উল্লেখ করে অনেকেই তাঁকে ভয়ঙ্কর বিদ্রোহী হিসেবেও আখ্যা দেন।

সুত্রঃ ntvbd.com